শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:১৫

সরকারি নির্দেশ অমান্য করে  হাজীগঞ্জে সপ্রাবি‘তে ‘ফি‘ আদায়ের মাধ্যমে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে !

কামরুজ্জামান টুটুল
সরকারি নির্দেশ অমান্য করে  হাজীগঞ্জে সপ্রাবি‘তে ‘ফি‘ আদায়ের মাধ্যমে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে !

সরকারি নির্দেশ অমান্য করে হাজীগঞ্জের বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোটা অংকের ফি আদায়ের মধ্য দিয়ে বার্ষিক পরীক্ষা নিচ্ছে। পরীক্ষা নেয়া বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা নিশ্চিত করলেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা বার্ষিক পরীক্ষাকে নির্বাচনি পরীক্ষা বলে গনমাধ্যমকে আখ্যায়িত করেছেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি অবগত নন জানিয়ে বলেন,পরীক্ষার ফি ফেরত দেয়া হবে আর এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়কে জবাবদিহীতার মধ্যে আনা হবে। আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) মহামারি কারণে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (বার্ষিক) পরীক্ষা বাতিল করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রাণালয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওয়ার্ক শিটসহ (বাড়ির কাজ) বা অ্যাসাইনমেন্টের মতো কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত করার জন্য এই মূল্যায়ন করবে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি গণমাধ্যমকে এমন বক্তব্য দেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুব রহমান তুহিন।

সরজমিনে শনিবার উপজেলার কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, চিলাচোঁ সরকারি প্রাথমিক ও ভাটোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। এদিন প্রথম শ্রেণির বাংলা, পরবর্তী সকল শ্রেনির গনিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উক্ত পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জনপ্রতি ২০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণির জনপ্রতি ৩০ টাকা, তৃতীয় শ্রেণির জনপ্রতি ৪০ টাকা, চতুর্থ শ্রেণির জনপ্রতি ৫০ টাকা এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জনপ্রতি ৬০ করে পরীক্ষার ফি নিয়েছে বিদ্যালয়গুলো। তবে বিদ্যালয় থেকে কাগজ ও প্রশ্ন পত্র সরবরাহ করা হয়েছে শিক্ষার্থীদেরকে। বিষয়টি শ্রেনী কক্ষে সহকারি শিক্ষকের সামনে নিশ্চিত করেছে শিক্ষার্থীরা।

চিলাচোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জিহাদ,মানহা, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল রাব্বী, মারিয়া, ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মেশকাত, নুরজাহান,পঞ্চম শ্রেণি শিক্ষার্থী ইউনুস, আব্দুর রহমানসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জানান, আজ (শনিবার) তাদের গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং বার্ষিক পরীক্ষার ফি বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শেনী অনুযায়ী উর্ধ্বমূখি ক্রমান্বয়ে জনপ্রতি ৩০, ৪০, ৫০ ও ৬০ টাকা নেওয়া হয়েছে।

ভাটরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির নুরুন নাহান, তামান্না, মাহিমা, তৃতীয় শ্রেণির উম্মে হাবিবা,নুসরতা জাহান, চতুথ শ্রেণির আব্দুল কাইয়্যুম, মুনতাহি জাহানসহ অন্য শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের আজ গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

চিলাচোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মনজুর হোসেন জানান আমরা অভিবাবদের অনুরোধে বার্ষিক পরীক্ষা নয়, মূল্যায়ন পরীক্ষা নিচ্ছি। পরীক্ষা ফি আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, পরীক্ষার প্রশ্ন ও খাতা ক্রয় বাবদ নূন্যতম একটা ফি (টাকা) শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিদ্যালয় ছাড়াও ওই কাস্টারে বেশ কিছু বিদ্যালয়গুলো এই মূল্যায়ন পরীক্ষা নিচ্ছে। তবে আমার বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ৮৯ জন বলে তিনি জানান এই প্রধান শিক্ষক।

ভাটরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত )আবুল কালাম বলেন, বার্ষিক পরীক্ষা নয় আমরা মূল্যায়ন পরীক্ষা নিচ্ছি। বার্ষিক পরীক্ষা আর মূল্যায়ন পরীক্ষার তফাৎ না বলতে পারলেও এই প্রধান শিক্ষক বলেন, কাস্টার কর্মকর্তার (সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা) অনুমতি নিয়েই তারা এই পরীক্ষা নিচ্ছেন আর এই বিদ্যালয়ে ১৩৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে বলে তিনি জানান।

রামপুর কাস্টার কর্মকর্তা ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান জানান, সরকারিভাবে সমাপনী পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা নেই। তাই আমরা কাউকে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা দেইনি। তবে অভিভাবকদের চাহিদার ভিত্তিতে বিদ্যালয়গুলো মূল্যায়ন পরীক্ষা নিচ্ছে সেটা আমি আবগত। অপর এক প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেণ, মূল্যায়ন পরীক্ষার ফি বাবদ টাকা নেওয়ার কথা আমি জানিনা। যদি ফি নিয়ে থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীদের ফেরৎ দেওয়া হবে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবু সাইদ চৌধুরী বলেন, পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি আমি অবগত নেই। যেহেতু পরীক্ষা নেওয়ার সরকারি নির্দেশনা নেই, সেহেতু যদি কোন বিদ্যালয় পরীক্ষা নেয়, তাহলে তাকে অবশ্যই জবাবদীহিতার আওতায় আনা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেণ, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাথমিকের সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। এখন উপজেলার কোন কোন বিদ্যালয় পরীক্ষা নিচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। এ সময় তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে কথা বলে আগামিকাল (আজ রোববার) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়